উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বলা হয়েছে এই তথ্য বাতায়ন প্রতিদিন ১৫ লাখ মানুষ দেখেন। র্যাঙ্কিং ও জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের ওয়েবসাইট অ্যালেক্সায় (www.alexa.com) ২৩ জুলাই রাতে দেখা যায় জাতীয় তথ্য বাতায়নের অবস্থান বাংলাদেশ থেকে দেখা ওয়েবসাইটগুলো মধ্যে ২৪২ নম্বরে। আর বিশ্বে ৮২,৮৩৫ নম্বর স্থানে।
সরকারের ইচ্ছে হলো দেশের নাগরিকেরা কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, পর্যটন ইত্যাদি তথ্য পাওয়ার জন্য জাতীয় তথ্য বাতায়নকে ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ হিসেবে ব্যবহার করবে। বলা হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞপ্তি, গেজেট, ই-সেবা, সরকারি ফর্মসমূহ, সিটিজেন চার্টার, বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের তালিকা, সাত লাখের বেশি ই-ডিরেক্টরি, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা, সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, জনপ্রতিনিধিদের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর ইত্যাদি সব তথ্যই ‘বাংলাদেশ জাতীয় তথ্য বাতায়ন’-এ পাওয়া যাবে। ইউনিয়ন পর্যায়ের ৪,৫৫০, উপজেলা পর্যায়ের ১৪,৪৬০, জেলা পর্যায়ের ৪০৩২, বিভাগ পর্যায়ের ৪৫৫, জেলা পরিষদ পর্যায়ের ৬৪, উপজেলা পরিষদ পর্যায়ের ৪৮৮, মন্ত্রণালয়-বিভাগ পর্যায়ের ৫৫, অধিদপ্তর পর্যায়ের ৩৪৫ এবং সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা পর্যায়ের ৪১৪টি ওয়েবসাইটকে একসূত্রে গেঁথে জাতীয় তথ্য বাতায়ন তৈরি করা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে পরিচয় করিয়ে দিতে এর একটি ইংরেজি সংস্করণও আছে, যা প্রশংসার যোগ্য। তবে তথ্য প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণে গরমিল রয়েছে। যেমন, বাংলা সংস্করণের প্রথম পাতার মুখবন্ধে লেখা রয়েছে: ‘জাতীয় বাতায়নের আওতায় দেশের সকল ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা, বিভাগ, অধিদপ্তর, মন্ত্রণালয়সহ সকল সরকারি দপ্তরের জন্য প্রায় ২৫ হাজার ওয়েব পোর্টাল (তথ্য বাতায়ন) নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সব দপ্তরে পোর্টাল চালু হলে জনগণের তথ্য ও সেবা প্রাপ্তি আরও সহজ হবে।’ অন্যদিকে, ইংরেজি সংস্করণে বলা হয়েছে ২৫ হাজারের বেশি পোর্টাল তৈরি করা হয়েছে যা পরীক্ষামূলক (বেটা সংস্করণ) অবস্থায় রয়েছে। এভাবে পুরো বাতায়নজুড়েই বাংলা ও ইংরেজি সংস্করণের তথ্য ও পরিসংখ্যানে দেখা যায়।
জাতীয় তথ্য বাতায়নে অনেক কিছু থাকলেও এটি ব্যবহারবান্ধব নয়। অর্থাৎ এটি ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়। কোনো তথ্য খঁুজে পাওয়া এখানে খড়ের গাদায় সুই খোঁজার মতো। তারপর যে তথ্যটি খঁুজে পেলেন সেটার ওপর নির্ভর করা যায় কি না, সেটা নিয়েও সন্দেহ দেখা দিতে পারে। কারণ, প্রচুর ভুল তথ্য ও উপাত্ত রয়েছে। একজন ব্যবহারকারী যখন একবার একটা ভুল তথ্য দেখতে পান, তখন স্বাভাবিকভাবেই অন্যান্য তথ্য নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগে। আর যখন পাতায় পাতায় ভুল তথ্যের সমারোহ দেখবেন তখন বুঝবেন অবস্থাটা কত গুরুতর।